ঢাকা | ২১ জুন ২০২৫ ইং | বঙ্গাব্দ

ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ

প্রকাশের তারিখ: মে ২১, ২০২৫ ইং

ছবির ক্যাপশন:
ad728
বাংলার প্রতিচ্ছবি : নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (২১ মে) দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশটি শুরু হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন এনসিপির কলাবাগান থানার প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ। এদিকে এনসিপির বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নির্বাচন ভবনের আশপাশে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বুধবার সকাল থেকেই আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিরাপত্তা রক্ষায় কড়া অবস্থান নেয় পুলিশ। ভবনের সামনের রাস্তায় দেওয়া হয় কাঁটাতারের ব্যারিকেড।

সেখানে পুলিশের পাশাপাশি কোস্ট গার্ড, বিজিবি, র্যাব ও সেনাসদস্যদের রয়েছে সতর্ক উপস্থিতি।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে এই কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। তাই কমিশনের ওপর ভরসা রাখতে পারছি না। ফলে দ্রুত নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরে সবকিছুকে পরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচনের দিকে নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন-জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া জরুরি। তিনি গণপরিষদ ও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণারও দাবি জানান।

ঢাকা উত্তরের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। কিছু রাজনৈতিক দল টেন্ডার না পেয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে। সরকারের উচিত বিষয়টি তদন্ত করা। কোনো দলকে সন্তুষ্ট করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়। জনকল্যাণের জন্য তাদের কাজ করা উচিত। 

তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচন বিএনপি না চাওয়ার কারণ রয়েছে। সার্বিকভাবে স্থানীয় নির্বাচন দেওয়ার মাধ্যমে সংকট সমাধান হবে। এটা ইসির আস্থা অর্জনে ভূমিকা রাখবে। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। এ কমিশনকে পুনর্গঠন করার জন্য আগামীকাল (বুধবার) আমরা মাঠে নামব। সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এ নির্বাচন কমিশনের ওপর আমাদের আস্থা নেই। ইশরাক হোসেনের মেয়র পদের মামলায় আদালতে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আখতার আরও বলেন, ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবৈধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকাই দায়ী বলে আমরা মনে করি। ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপসগং’ মামলার বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন নজিরবিহীনভাবে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি, যার ফলে একতরফা রায় প্রদান করা হয়েছে। এমনকি রায়ের পরে তারা উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা না করে মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এর আগেও আমরা দেখেছি, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ বজায় রাখার পরিবর্তে এমন সব বক্তব্য প্রদান করেছে, যার সঙ্গে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অবস্থানের সাযুজ্য রয়েছে। তিনি বলেন, এ মামলায় রায় ঘোষণার আগেই সংশ্লিষ্ট আইনের অধীন গত ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। ফলে পুরো মামলাটিই অকার্যকর হয়ে গেছে। রায় ঘোষণার পর গেজেট প্রকাশের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাইলেও, মতামত প্রদানের আগেই তড়িঘড়ি করে রাতের আঁধারে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক ভূমিকা স্পষ্টতই পক্ষপাতমূলক।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ অনুযায়ী গঠিত, যা সে সময় ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষ প্রত্যাখ্যান করেছিল। 

এতদসত্ত্বেও, আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার আগেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। ফলে বিদ্যমান নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার প্রতিফলন ঘটবে না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। পলাতক ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবকে নাকচ করেছে বিদ্যমান নির্বাচন কমিশন। এর ফলে এই কমিশনের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয় বলেই আমরা মনে করি।
কমেন্ট বক্স