বাংলার প্রতিচ্ছবি : ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন তামিম ইকবাল। পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে ফিরলেও দুটি ওয়ানডে খেলে চলে যান জাতীয় দলের বাইরে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিক অবসর নিলেও এখনও টেস্ট ও ওয়ানডের সঙ্গে আছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাকে পাওয়ার আশা করছে বিসিবি। তার মতামত জানতেই বুধবার তার সঙ্গে সভায় বসেছিলো নির্বাচক কমিটি। যদিও সভাতে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানালেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। দুই একদিনের মধ্যেই তামিমের খেলা না খেলার ব্যাপারে জানা যাবে বললেন সাবেক এই অধিনায়ক।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল আগামী ১২ জানুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হবে। এই কারণেই তামিমের মতামত জানা জরুরি নির্বাচকদের জন্য। বেশ সময় ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হলেও সিদ্ধান্ত কিছুই আসেনি। এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে লিপু বলেছেন, ‘কোনও আলোচনাতেই কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় না। এটা অনেক বড় একটা সিদ্ধান্ত। আমাদের উপর বোর্ড আছে। আমরা বোর্ডের তরফ থেকে এসেছি, আমাদের তরফ থেকে কোনও অসুবিধা নেই। একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, একজন খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে ক্রিকেটে ফেরত আসার ব্যাপারে তার ঘনিষ্ঠজন, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব কিংবা হতে পারে তার প্রিয় কোচের সঙ্গে আলাপ আলোচনার ব্যাপার থাকে। একটু সময় নেওয়ার ব্যাপার তো এসেই যায়। আমাদের যেহেতু ১২ তারিখে দল ঘোষণা করতে হবে। তার আগেই বোর্ডের কাছে দল দিতে হবে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে যথেষ্ট সময় আছে। তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই।’
তামিমের সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাইলে সাবেক এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘কী আলোচনা হয়েছে সেই ব্যাপারটি আমাদের মধ্যেই থাকুক। আমরা যেহেতু আলোচনা করেছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। তামিমকে একটু সময় দেওয়াই যায়।’
দল ঘোষণার বাকি মাত্র চার দিন। এই সময়ের মধ্যে সব চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে কিনা এমন প্রশ্নে লিপু বলেছেন, ‘চার দিন তো অনেক সময়। তামিমের মতো একজন খেলোয়াড়কে আমরা সম্মান জানাই। তার সিদ্ধান্তকেও সম্মান জানাই। তিনি যদি কিছু সময় চান অসুবিধা কী? আমাদের তো হোমওয়ার্ক করা আছে। আমি বোর্ডের সঙ্গেও কথা বলেছি, কোনও সমস্যা নেই। সিদ্ধান্তের জন্য খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। অনেকদিন তো অপেক্ষা করেছেন, আর কয়েকটা দিন মাত্র।’
কয়েকদিন আগে শহীদ আফ্রিদির একটি ব্লগে তামিম জানিয়েছিলেন তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শেষ হয়ে গেছে। বুধবার এই বিষয়ে প্রধান নির্বাচকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি কূটনৈতিক উত্তর দিলেন, ‘সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। এই বিষয়ে তার (তামিম) মুখ থেকে শোনাটা খুব বেশি জরুরি। আমার মনে হয় আমরা আরও দুই-একদিন অপেক্ষা করতে পারি।’
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণেই মূলত জাতীয় দলে নেই সাকিব আল হাসান। এর বাইরে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের খড়গও তার মাথার ওপরে। সবমিলিয়ে কঠিন সময় পার করছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। তারপরও কিছুদিন আগে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছিলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভাবনাতে আছেন সাকিব। বুধবার লিপুর কাছে সাকিবের ব্যাপারে জানতে চাইলে তেমন কিছু জানাতে পারলেন না, ‘না, সাকিবের ব্যাপারে কোনও নির্দেশনা আসেনি। আমরা জেনেছি, সাকিব যে পরীক্ষা দিয়েছে সেখানে উত্তীর্ণ হতে পারেননি। দুর্ভাগ্যবশত, সেটি খুব হতাশাজনক। আমাদের জানতে হবে তিনি ব্যক্তি পর্যায়ে কোনও পরীক্ষা দিয়েছেন কিনা?’
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এর আগে ১২ জানুয়ারির মধ্যে আইসিসিকে ১৫ সদস্যের প্রাথমিক দল জমা দেবে বিসিবি। তামিমকে দলে চান নির্বাচকরা, কিন্তু তামিম নিজে চান কিনা সেটাই এখন দেখার। নির্বাচকরা জানিয়েছেন দুই একদিনের মধ্যেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। তামিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। আরও একটি টুর্নামেন্টের আগে কী অপেক্ষা করছে, সেদিকেই নজর এখন সবার!