বাংলার প্রতিচ্ছবি : উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার (রেকনেসান্স জেনারেল ব্যুরো) এক সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। ওই সদস্য সং কুম হিয়ক, ‘আন্দারিয়েল’ নামে পরিচিত একটি হ্যাকিং দলের সক্রিয় সদস্য বলে জানা যায়। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, সং কুম হিয়ক উত্তর কোরিয়ার আইটি কর্মীদের মার্কিন নাগরিক সেজে বিদেশি কোম্পানিতে চাকরি পেতে সহায়তা করতেন। চাকরির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের বড় অংশ কিম জং উনের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে ব্যয় করা হতো।
২০২২ সাল থেকে সং কুম হিয়ক মার্কিন নাগরিকদের নাম, সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর এবং ঠিকানা চুরি করে ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করতেন। এই ভুয়া পরিচয় দিয়ে উত্তর কোরীয় কর্মীরা চাকরি পেতেন। আর সেই উপার্জনের ভাগ দিতেন সং কুম হিয়ককে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, চীন ও রাশিয়ায় অবস্থানরত হাজার হাজার দক্ষ আইটি কর্মী এই প্রতারণামূলক কর্মসূচির অংশ। তাদের বানানো সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয় ব্যবসা, স্বাস্থ্য, সামাজিক যোগাযোগ ও বিনোদনের নানা খাতে। এমনকি ভার্চুয়াল মুদ্রা লেনদেনের মাধ্যমেও অর্থ পাচার হয়।
এর পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ আরও চারটি রাশিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিশেষভাবে টার্গেট করা হয়েছে আসাত্রিয়ান আইটি ওয়ার্কার নেটওয়ার্ককে, যার প্রতিষ্ঠাতা গায়ক আসাত্রিয়ান উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তি করে ৩০ জন আইটি কর্মীকে রাশিয়ায় কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
এই পদক্ষেপ জাতিসংঘের ২০১৬ সালের নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে, যার উদ্দেশ্য ছিল উত্তর কোরিয়ার বেআইনি অস্ত্র কর্মসূচি রোধ করা।
ট্রেজারি বিভাগের উপসচিব মাইকেল ফলকেন্ডার বলেন, ‘এই পদক্ষেপ পরিষ্কার করে যে উত্তর কোরিয়া এখনো গোপনে নিজের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছে। আমরা কিম প্রশাসনের এই চক্রান্ত থামাতে সম্ভাব্য সব কৌশল ব্যবহার করব।’
উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা ছদ্মনামে পরিচয় দিয়ে জাল কাগজপত্রের সাহায্যে চাকরির জন্য আবেদন করেন। তারা অনেক সময় কোম্পানির নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ম্যালওয়্যার ঢুকিয়ে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার মতে, এই পরিকল্পনায় শত শত মিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে।
২০২৪ সালের মে মাসে সিবিএস নিউজে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানে ‘স্টিভেন স্মিথ’ নামের এক হ্যাকারকে শনাক্ত করা হয়, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘নো-হায়ার লিস্ট’-এ থাকা সত্ত্বেও এক ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার চেষ্টা করেছিলেন।