বাংলার প্রতিচ্ছবি : রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো চার যুবকের বিষপানের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আহত জুলাই যোদ্ধারা।
এ ঘটনার জন্য তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়ী করেছেন।
রোববার দুপুরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে ওই চার যুবক বিষপান করেন। তারা হলেন- শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন (আবু তাহের)। পরে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনার পর রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চিকিৎসাধীন আহত অন্য জুলাই যোদ্ধারা। এ সময় আহত এক জুলাই যোদ্ধা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার চার ভাই বিষপান করেছে, এজন্য প্রথমত দায়ী করব গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে। দ্বিতীয়ত দায়ী করব আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যে সরকার রাজপ্রাসাদে বসেছে। তাদের উচিত ছিল গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
সরকারের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ১০ মাস হলেও চিকিৎসার জন্য কতজনকে দেশের বাইরে পাঠিয়েছেন। এখনো সে সংখ্যাটা ৫০ হয়নি। অথচ আমরা আহত হয়েছি ২২ হাজারের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে চোখ হারিয়েছেন এক হাজারের বেশি। আমাদের হাত-পা হারিয়েছেন অন্তত ৩৮ জন। সেখান থেকে মাত্র ৫০ জনকে বিদেশে পাঠিয়েছেন; তাও কয়েক ধাপে।
‘কিভাবে পাঠিয়েছে সেটিও খোলাসা করে দিতে চাই। আপনারা জানেন, ৫ আগস্ট বিজয়ের পর ৮ আগস্ট সরকার দায়িত্ব নেওয়া পরও আমাদের কোনো ব্যবস্থা হচ্ছিল না। আমরা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে যমুনা ঘেরাও করি। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মিটিং করে অনুরোধ করেছিলাম। হাতজোড় করে বলেছিলাম- আমাদের হাত-পা পচে যাচ্ছে আপনারা আমাদেরকে বাঁচান। আমারা এ দেশের জন্য লড়েছি। আপনি যে চেয়ারে বসেছেন, আপনার আসার জন্য যে লাল গালিচা বিছিয়ে দিয়েছিল, সেই লাল গালিচা আমার ওই চোখ ও হাত-পা হারানো ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে। আমি সরাসরি তাকে এ কথাটি বলেছিলাম। তাকে বলেছিলাম তিন দিনের মধ্যে ডাক্তার আনতে হবে, তিনি এনেছিলেন তবে আইওয়াশের মতো চীন থেকে। এছাড়া মাঝে মধ্যে নেপাল থেকে ডাক্তার এসে দু-চারটা রোগী দেখে চলে যায়।
এই জুলাই যোদ্ধা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, বর্তমান সরকার আমাদের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় বসেছে, তাহলে কেন তারা আমাদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে না।