বাংলার প্রতিচ্ছবি : আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠিতব্য নারীদের বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নিতে হলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ছয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। নিজেদের সুবিধাজনক জায়গায় রাখতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচে জিততেই হতো। পরিকল্পনা মতো আইরিশদের গুঁড়িয়ে তিন ম্যাচই জিতেছে বাংলাদেশ। যদিও নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়নি এখনও। চলতি মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতলেই সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়ে যাবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। জ্যোতির কাছে এই সিরিজটি তাই কেবল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ নয়, বিশ্বকাপের টিকিটি পাওয়ার মিশনও।

তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাচ্ছে। আগামী সোমবার সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দল দেশ ছাড়বে। তার আগে শনিবার দুপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। সেখানে জ্যোতির লক্ষ্য সিরিজটা নিজেদের করে নেওয়া। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই যেন চারটা পয়েন্ট নিতে পারি, বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে পারি। আমাদের ওয়ানডে দলটা গত সিরিজে যেমন বেটার ক্রিকেট খেলছে, অনেক কিছুই হয়তো অনেকের মাথায় থাকবে। আমি আমার দলকে একটা পরিষ্কার বার্তা দিতে চাই, ওখানে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে, সিরিজ জিততে হবে। পরের হিসাবটা পরে আসবে। ম্যাচ জিতলেতো সমীকরণ মিলেই যাবে। ম্যাচ জেতার দিকেই আমাদের ফোকাস।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশন  যে কোন দলের জন্যই কঠিন। সেটা যদি হয় সেন্ট কিটসে, সেটি আরও কঠিন। যদিও দলের সবাই এই সিরিজটিকে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়ার মিশন হিসেবে নিয়েছে। এই কারণে জ্যোতির কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস খানিকটা বেশি, ‘দেখেন প্রত্যেকটা জায়গায় যেখানে আমরা খেলতে যাই না কেন, চ্যালেঞ্জ আমাদের থাকবেই। কোথাও কেউ আমাদের সহজভাবে ওয়েলকাম জানাবে না। আমাদেরকে অবশ্যই কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো ফেস করতে হবে। আমাদের ইতিবাচক থাকার গুরুত্ব অনেক বেশি। সেন্ট কিটসের উইকেট সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে। হ্যাাঁ আমরা ২০১৮ সালে খেলে এসেছিলাম, ওই দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই এখানে নেই। সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ভর করছে দল আসলে কীভাবে দেখছে এই সিরিজটাকে। শুধুই এটা কি একটা সিরিজ নাকি বিশ্বকাপের টিকিট-সেটা মাথায় রাখা জরুরি। সবার অনুশীলন ও কথা বার্তা শুনে মনে হচ্ছে সবাই এই সিরিজকে ঘিরে অনেক বেশি ফোকাসড। কেউই চায় না, আমরা বাছাই পর্ব খেলি।’ 

সেন্ট কিটসের উইকেটে বাংলাদেশ পুরুষ দলই খাবি খেয়েছে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে সবকটিতেই হেরেছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান করেও ম্যাচ জিততে পারেনি। সেন্ট কিটসের ব্যাটিং বান্ধব উইকেট নিয়ে জ্যোতির ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘এটা কিন্তু অনেক ভালো একটা বিষয়। ওখানে স্পিন এতো বেশি পায় না। আমার মনে হয় এটা ব্যাটারদের জন্য খুব ভালো। যদি ভালো ব্যাটিং করতে পারি, আমাদের বোলারদের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যাবে। বোলাররাতো বরাবরই ভালো করে। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সবমিলিয়ে আমাদের কম্বিনেশনটা খুব ভালো অবস্থায় আছে। আশা করি সেরাটা দেওয়া সম্ভব হবে।’

কয়েক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ নারী দল প্রথমবারের মতো লংগার ভার্সন ম্যাচ খেলেছে। সেখানে খেলার অভিজ্ঞতা ওয়ানডে সিরিজে কাজে দেবে বলে জানালেন বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘অনেক বেশি প্রভাব রাখবে। যারা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেছে, তারা কিন্তু জাতীয় দলের প্রস্তুতি ম্যাচেও রান করেছে। জাতীয় লিগে যেহেতু আমি রান করেছি, আমার কাছে মনে হয়েছে ভালো বোধ করছি।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলতে বাংলাদেশের মেয়েরা আগামী ১৩ জানুয়ারি দেশ ছাড়বে। ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে আগামী ১৯ জানুয়ারি। পরের দুই ওয়ানডে ২১ এবং ২৪ জানুয়ারি।  ওয়ানডে সিরিজ শেষে সফরকারী বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে। আগামী ২৭, ২৯ এবং ৩১ জানুয়ারি হবে তিনটি টি-টোয়েন্টি। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের সবগুলো ম্যাচই হবে সেন্ট কিটসে।